সামাজিক বাধাঁ

সামাজিক বৈষম্য
আর্থ-সামাজিক বৈষম্য হ্রাসে সরকারকে জোর দিতে হবে
টেকসই উন্নয়নে আর্থ-সামাজিক খাতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে টেকসই উত্তরণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অত্যন্ত ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্যে যেসব সুযোগ পেত বাংলাদেশ, তা আর পাওয়া যাবে না।
শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ও টেকসই উন্নয়ন: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সেমিনারে সুশীল সমাজ প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।
ইক্যুইটিবিডি এবং এলডিসি ওয়াচের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতির বক্তব্য রাখেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ। সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগের (জিইডি) সদস্য ঊর্ধ্বতন সচিব ড. শামসুল আলম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ার হোসেন, ডব্লিউটিও সেলের পরিচালক ও যুগ্ম-সচিব মো. হাফিজুর রহমান, এলডিসি ওয়াচের আন্তর্জাতিক সমন্বয়কারী নেপালের গৌরি প্রধান, ইক্যুইটিবিডি-র প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী প্রমুখ।
কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আমাদের জাতীয় মর্যাদা। এ মর্যাদা আমরা যোগ্যতার ভিত্তিতে অর্জন করেছি, এটি কারও দয়া-দাক্ষিণ্য নয়। বিশ্ব বাণিজ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলো যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, এ উত্তরণের ফলে তার কিছু কিছু হয়ত আমরা হারাব, কিন্তু আমাদের এখন সামনে তাকাতে হবে, যাতে সাহায্যের বদলে আমরা নিজেরাই কিছু করতে পারি। এ জন্য তিনি আর্থ-সামাজিক খাতে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
ড. শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের উন্নয়ন চাহিদার শতভাগ পূরণ করছে না। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণকালে বাংলাদেশকে যে সংকট মোকাবেলা করতে হতে পারে তার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যবস্থাই হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, ২০২৭ সালের পর বাংলাদেশ নিজেই একটি বিনিয়োগকারী দেশে পরিণত হবে। ফলে আমাদের আর বৈদেশিক সাহায্য প্রয়োজন হবে না।
ডব্লিউটিও সেলের পরিচালক, যুগ্মসচিব মো. হাফিজুর রহমান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবেও আমরা আমেরিকা বা রাশিয়ার মতো উন্নত দেশ থেকে ডব্লিউটিও-র স্পেশাল অ্যান্ড ডিফারেনশিয়াল ট্রিটমেন্ট সুবিধা পুরোপুরি পাইনি। এমনকি চীন ও ভারতের মতো বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশও আমাদের সেই সুবিধা দেয়নি। কাজেই নতুন করে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে সেসব সুবিধা আর আমরা পাব না- এমন আশঙ্কার অবকাশ নেই।
রেজাউল করিম চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে স্থায়িত্বশীলতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জলবায়ুভিত্তিক দুর্যোগ ও বিদ্যমান বৈষম্য। জলবায়ু সহনীয় অবকাঠামো তৈরিতে আমাদের জোর দিতে হবে।
আনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, উত্তরণের ফলে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে যেসব সুবিধা আমরা পেতাম, তার কিছু হয়ত আমরা হারাব। কিন্তু আমাদের পাবারও অনেক কিছু রয়েছে। মানসম্পন্ন শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক যোগ্যতা বাড়াতে হবে।